৭ম ও শেষ পর্ব:
বন্দি হয়েছে অভিশপ্তদের হাতে। সেও আজ সকলের মতোই ভয়ংকর গুহায় উপস্থিত।
হঠ্যৎই উমা উঠে যাওয়াতে তার সাথে উঠে যায় অমিত। আজ যে তার সাফল্যের এক আনন্দময় রাত। সেটা মাথায় রেখে রাতে চোখই যা বন্ধ করে রেখেছিলো সে। ঘুম আসে নি তার। সে উঠে উমাকে দেখতে না পেয়ে মাকে নিয়ে চলে যায় উপমার অন্ধকার রুমে। সেখান থেকে উপমাকে নিয়ে বের হতেই গুহার থেকে হট্ট হাসির শব্দ পায় সে।
উপমাকে নিয়ে অমিত ও তার মা যখন সেই পুরোনো গুহায় অভিশপ্তদের আস্থানায় প্রবেশ করতে শুরু করলো ঠিক তখনই তাদের চোখে এক নতুন রুপের দর্শন হলো।
সে কি! উমাও সেই গুহায় উপস্থিত। তবে সেইটা নিজের স্বরুপে নয়। এ যেন এক অভিনব শারীরিক গঠন নিয়ে নতুন ভাবে তৈরী হয়েছে উমা। দুই পায়ের সাথে চার-চারটি হাত। প্রতিটি হাত রক্তাক্ত লাল। আর মুখমন্ডলটাও যেন একই রঙ্গে রাঙ্গানো।
উমা সেই সময় ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে সোজা সেই গুহায় প্রবেশ করে ফেলে। আর সেইখানেই তার সাথে দেখা হয় মহাতান্ত্রিক কবিরাজের সাথে। উমাকে দেখে তান্ত্রিক তার মহাজাগতিক শক্তির মাধ্যমে তখন এটা বুঝেই গিয়েছে যে, সৃষ্টা প্রদত্ত এই সেই শক্তি যার শক্তির সাথে তিনি তার নিজের শক্তিকে মিলিত করতে পারলেই অভিশপ্তদের সাথে লড়াইয়ে তাদের কুপকাত করা সম্ভব হবে।
উমার অভিনব শক্তির সাহায্যে নিয়ে সেই তান্ত্রিক কবিরাজ তার শারীরিক গঠনে পরিবর্তন আনতে শুরু করলো। তারা দু’য়ে মিলে এ যেন এক বড় আকৃতির ভয়ঙ্কর রুপে পরিনত হয়েছে। উমা আর সেই তান্ত্রিক কবিরাজের আত্মার মিলনের ফলে তাদের শক্তি যেমন দ্বিগুনে পরিনত হয়েছে ঠিক তেমনি উমাও তার জন্মের পূর্বে ঘটে যাওয়া তার ভয়ষ্কর অতীতের কথা একে একে স্বরণে নিয়ে আসতে পেরেছে। যা শুধু সম্ভব হয়েছে সেই তান্ত্রিক কবিরাজের আত্মার সমষ্টির ফলে।
অন্যদিকে গুহায় যখন অমিত তার মা এবং তার স্ত্রী উপমাকে নিয়ে প্রবেশ করলো ঠিক সেই সময়ই তারা দেখতে পেলো সেই গুহায় প্রতিদিনের থেকে আলাদা এক রুপ। যা তারা এই গুহায় আগে কখনো দেখেনি। দুই পা ও চার হাত বিশিষ্ট আর শারীরিক গঠন কালো বর্নধারী। যার মুখমন্ডল আর ভাষা দুটিই অর্ধেক পুরুষ আর অর্ধেক নারীতে সাজানো।
এ যেন এক ভয়ানক আগুনের শিখা হয়ে এসেছে ধংসের নেশা নিয়ে।
ভয় ক্রমশ বাড়তে লাগলো অমিত ও তার মায়ের। উপমা গুহার এমন সব রূপ দেখে ছুটে গেলো অভিনব উমার সেই শারীরিক গঠনের ধংসস্তুপের দিকে। এখন অভিশপ্তদের সাথে উমার দন্ধ যুদ্ধের পালা। মুখোমুখি উমা ও অভিশপ্তরা সেই ভয়ানক গুহায়। অাগুনের উল্কিতে দন্ধযুদ্ধো চলছে। এদিকে পালানোর চেষ্টায় মরিয়া হয়ে রয়েছে অমিত ও তার মা।
মনে মনে ভাবছে, আজ বোধ হয় আর রক্ষা নেই। এখন পালাই পরে বেঁচে থাকলে অমর হওয়া যাবে।
পালানোর চেষ্টা করতেই উপমা তাদের এক ঝাঁক আগুনের উল্কিতে পথ কেটে দিলো আর লৌহিত শিকলে বেঁধে রাখলো গুহার কোণে।
যুদ্ধও চলছে অস্বাভাবিক ভাবে। প্রায় দুই প্রহরের দন্ধযুদ্ধের পর অভিশপ্তদের কিছু কিছু ধংস হলেও আদি বাদশাসহ প্রবীন কিছু দানব এখনো রয়ে গেছে যুদ্ধোশালায়।
মহাদানবিক মন্ত্রের দ্বারা এক পর্যায়ে তাদের বন্ধি করে ফেলে উমা। আর সন্ধ্যা এগিয়ে এসে যখনই আঁধার নামার সময় হয়েছে সেই সময় উমা বসেছে তার অভিনব শরীর নিয়ে দক্ষযজ্ঞে। এই যজ্ঞে উমা সফল হলে ধংস হবে অভিশপ্তদের ভয়নক শরীর সহ তাদের বিশাল এই ধর্মশালা। ভয়াবহ এই যজ্ঞ প্রায় এক প্রহর চলার পর সমাপ্ত হলে উমার হাতে অাসে এক বিধংসী বর। যে বরের একবারের প্রয়োগে সে যাদের চাইবে তাদের সে ধংস করতে পারবে।
উমার সেই বরের প্রয়োগে ধংস হলো অভিশপ্তদের ধর্মশালাসহ আদি বাদশা ও দানবেরা। বাকি রইলো অমিত ও তার মা ।
ঐই চার সন্তানের হত্যাকারী রুপে এখন উমার সামনে দাঁড়িয়ে। উমার ভয়ানক চোবল তাদের আর বাচঁতে দেয় নি। অবশেষে শেষ হলো ভয়ানক এই আগুন খেলা।
মুক্ত অবস্থায় উপমাকে সেই বাড়িতে রেখে দেয় উমা। আর অবিনব শরীর নিয়ে তান্ত্রিক কবিরাজ বিলিন হয়ে যায় অসীম আকাশে। আর উপমা উমাকে মাটিতে পায় অজ্ঞান অবস্থায়। উমার শারীরিক বিশ্রাম দরকার সাথে জ্ঞান ফেরাটাও। এখন তো মধ্যরাত!