একটা সময় ছিল যখন বুঝতাম না জীবনের কোন মানে। জীবনটা সেদিকেই চলত যেদিকে দুচোখ বুলাতাম। এলোপাতাড়ি জীবন! নেই কোন মানে। চলছে অগোছরে। আস্তে আস্তে যতই দিন যাচ্ছে ততই ক্রমশ বড় হচ্ছি। উপলব্ধি করতে শুরু করলাম জীবনের মানেটা কি? একটা সময়ে ঠিকই উপলব্ধি করতে পেরেছি।
আসলে যেভাবে আমরা জীবনকে উপভোগ করছি বা যে চোখে দেখছি আসলে জীবন সেরকম নয়। বাস্তবতা অনেক কঠিন। আমাদের বেঁচে থাকতে হলে এই বাস্তবতার সাথে লড়াই করে বাঁচতে হবে। তাল মিলিয়ে চলতে হবে নিত্যদিন নিত্যনতুনভাবে। মিশিয়ে নিতে হবে বাস্তবতার সাথে।
জীবন মানে এই নয় যে যাচ্ছেতাই? জীবনটাকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে তোলার দায়িত্বটা আমাদেরই। অন্য কেউ সেটা গুছিয়ে দেবে না। যে যত অর্জন করতে পারবে সে তত উপরে উঠতে পারবে।
বাস্তবিক জীবনের গল্পগুলো ব্যর্থতা আর সফলতা দিয়েই শুরু হয়। হয়তো কেউ শিখেছে না হয় জিতেছে। হতাশা হওয়ার নাম জীবন নই। লক্ষ্যভেদ করতে হলে অনেকে চড়াই উতরাই পেরুতে হবে। পরিশ্রম আর সফলতা দিয়ে জীবনকে সহজলভ্য করে তুলতে হবে। জীবনকে সিনেমার মত মনে করো না। বাস্তবিক জীবনের গল্প সিনেমার থেকেও সিনেমাটিক হয়। তোমার পকেটে যখন টাকা থাকবে না তখন বুঝবে বাস্তবতা কতটা নির্মম, কতটা পাষান্ড। সমাজের কাছে দ্বারস্থ হয়েও লাভ হবে না তখন। উল্টো সমাজ তোমাকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে চলে। দু’মুঠো খাইয়েও দিবে না। সেটা নিজেকে অর্জন করতে হবে। সমাজ তোমার দিকে তাকিয়ে থাকে না।
তোমাকে দেওয়ার জন্য সমাজের কিছুই নেই অবহেলা ছাড়া। কিন্তু সমাজকে দেওয়ার জন্য তোমার কাছে অনেক কিছুই আছে। সমাজে সম্মানীতদের স্থান ও মূল্যায়ন খুবই কম। সমাজ বিত্তশালীদের পেছনে দৌড়ায়। তোমার অর্থ আছে তার মানে তুমি সম্মানীত, অন্যথায় তুমি কে? আমি কে? তোমার দুয়ারে যায় কে? এর বাস্তব উদাহরন অ্যাপল এর কর্ণধার স্টিভ জবস। স্কুলে পড়াশোনাকালীন তাকে স্কুল থেকে বিতাড়িত করা হয়। আজকের বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি বিল গেটস। তাকেও স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। তাদের মেধার মূল্যায়ন করা হয় নি। তাদের ভেতরের প্রতিভা উদঘাটন করতে পারে নি কেউই। বরং অবহেলাই তাদেরকে মেধার মূল্য দিয়েছে। সেই অবহেলাই তাদেরকে এনে দিয়ে উপরে উঠার শক্তি। আজ তারা বিশ্বের সর্বোচ্চ আসনে সম্মানীত।
আজকে তুমি সমাজে অবহেলিত। সমাজ তোমাকে মূল্যায়ন করছে না। দূরে ঠেলে দিচ্ছে তোমায়। নীরবে সহ্য করে নাও।
নিজেকে শক্ত করে তোল। স্বপ্ন দেখতে শিখ। লক্ষ্য স্থির করও। উঠে দাঁড়াও নিজের শক্তিতে। আর ছুটতে থাকও নিজের গন্তব্যে। প্রতিজ্ঞা করও যে আমাকেও ওই বিত্তশালী বা সম্মানীতদের একজন হতে হবে। নিজেকে পরিশ্রমী আর উদ্যমী করে তোল। জীবনের শেষ পর্যায়ে গিয়ে হলেও সফল তুমি হবেই। নিজের মেধাকে কাজে লাগাও। নিজে উদ্যোক্তা হও। একা না পারলে বিশ্বস্ত সঙ্গী বানাও। কাজ করে যাও নিজের দেখানো পথ অনুসারে। পরিশ্রম আর সততাকে নিজের নিত্যদিনের সঙ্গী করে নাও। বারবার চেষ্টা করতে হবে।
দেখবে একদিন তুমিই হবে সমাজের সবচেয়ে সম্মানীত। সেদিন সমাজ তোমার পিছনে ছুটবে। যে লোকটা একদিন তোমায় অবহেলা করে রাস্তার বাহিরে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিল একদিন দেখবে সে লোকটাই তোমার পিছনে ছুটছে। বাস্তবতাটা এরকমই। হয়তো জিতবে না হয় শিখবে। হার বলতে কিছু নেই। পরাজয় নামক কোন শব্দ নেই। আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম আর সততাই তোমাকে এনে দিবে সফলতা।