অনেকদিন পর নিজ পিত্রালয়ে যাচ্ছে নীরা,
প্রিয়জনদের ছেড়ে বহুদিন নানা বাড়ি ছিল সে,
নানা বাড়িতেই পড়ালেখা করে বড় হয়েছে , নিজের পুরনো স্কুল – বাসা ফেলে যেতে খুব কস্ট হচ্ছে, তারপরও যেতে হবেই। ওইদিকের গ্রামের একটা স্কুল এ ক্লাস নাইন এ পড়া অবস্থায় ট্রান্সফার হয়ে চলে যায়। গ্রামের স্কুল তাই কম্বাইন্ড ছিল। মানে ছেলে মেয়ে একসাথে, শুরু থেকেই একটা ছেলের সাথে অকারনেই ঝগরা লেগে থাকত ওর , অনেকটা গায়ে পরে ঝগরা লাগার মতো। ছেলেটার নাম রাতুল। এক বছর যাওয়ার পর যখন টেন এর টেস্ট পরিক্ষা আসে, তখন নীরা রাতুল-কে ফ্রেন্ডশিপ অফার করে। তারপর ওদের বন্ধুত্ব টা বেশ জমেছিলো। দেখতে দেখতে ওরা দুজনেই কলেজে উঠে গেল। যদিও দুই জন দুই কলেজে পরতো, তাদের ফ্রেন্ডশিপ টা তখনো মজবুত ছিলো। ওদের বেশিরভাগ কথা হতো ফোনে। নীরা খুবই সেন্সিটিভ ছিল রাতুল এর ব্যাপার নিয়ে। একদিন রাতুল নীরাকে বলে নীরা আমি তোকে ভালবেসে ফেলেছি, নীরা ব্যাপার টা প্রথমে একটুও সিরিয়াসলি নেয়নি। দুইদিন পর যখন রাতুল আবার নীরাকে বলে যে, সে সত্যিই নীরাকে ভালবাসে তখন নীরা একটু চিন্তায় পরে যায়। নীরা রাতুলকে এইবার না করতে পারলো নাহ- এভাবে তাদের রিলেশন টা সপ্তাহ খানেক ভালই চলে। হটাৎ একদিন রাতে নীরার স্কুল ফ্রেন্ড সাথী কল দেয় নীরাকে, সাথী কল দিয়ে বলে নীরা তুই আমার সাথে কাজটা ঠিক করিস নাই, তুই জানিস আমার আর রাতুল এর কয়েক বছর ধরে রিলেশন আছে- তবুও তুই ওকে প্রেমের ফাদে ফেললি।
তখনি যেন নীরার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরলো।
নীরা তো এমন কিছু আশা করে নি রাতুল এর থেকে। নীরা তো ওকে প্রেম করতে বলে নি, ভালই তো চলছিলো বন্ধুত্ব টা, তবে কেন নীরার সাথে এই অভিনয় টা করলো রাতুল।
এইটা ছিলো নীরার জীবনের প্রথম ধাক্কা–
কলেজে ওঠার পর প্রতিনিয়ত প্রপোজাল আসতে থাকে নীরার উদ্দেশ্যে, কখনো সেইম ব্যচ, কখনো বড় ভাই, আসার ই কথা দেখতে শুনতে কোথায় কমতি ছিলো নাহ নীরার, এইভাবে প্রপোজ সবগুলা প্রপোজাল ইগনোর করে যাচ্ছিলো নীরা,
কিন্তু এইভাবে আর কতো দিন, তার উপর রাতুল এর প্রতারনা, অনেকটা রাতুল এর উপর রেগে গিয়েই একটা প্রপোজ এক্সেপ্ট করে ফেলে নীরা,
কখনো ভাবেনি ও যাকে ভালবাসতে চলেছে ছেলেটার ব্যাপারে, মন প্রান উজার করে ভালবেসেছে সে, ছেলেটার মিথাগুলা এমন ঘুছালো ছিলো যে, মেয়েটা কখনো ভাবতেই পারেনি ও মিথ্যা বলেছিল। ছেলেটা সনাতন ধর্মালম্বি- তাতে কি আসে যায়, ভালবাসা তো জাতি ধর্ম মানে নাহ, নীরা বুঝেউঠার আগেই জোর করে কিস-হাগ করার চেষ্টা করে ছেলেটা। এর মধ্যেই একদিন ছেলেটা পাল্টে যায়, সব ভালবাসা যেন বিশের মতো মনে হয় ছেলেটার, ছেলেটার আর রিলেশন রাখার ইচ্ছা নাই নীরার সাথে-
এইদিকে নীরা ওকে ছারা প্রতিটা মুহুর্ত কুরে কুরে মরছিলো। হ্যা বেচে থাকতে পারবে নীরা, কিন্তু সুখে থাকতে পারবে না কখনো। সব সময় শুধু এমন চিন্তা আসে, ও কি আসলেই আমাকে ভালবাসেনি, সব কি তাহলে মিথ্যা ছিলো? ওদের ব্রেকআপ টা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না নীরা- একটা মানুষ এতো মিত্থ্যা কি করে বলতে পারে?? তাও আবার এতটা গুছিয়ে- কেন মিথ্যা আশা দেখায়, মিথ্যে ভালবাসার অভিনয় করলো সে? নীরার ভালবাসা তো মিথা ছিলো নাহ- তাহলে
কেন এইরকম একটা ছেলেকে ভালবাসল নীরা ??
বুঝ হওয়ার পর এইটা ছিলো নীরার জীবনের দ্বিতিয় ধাক্কা। একটা মানুষ কতবার কষ্ট সহ্য করতে পারে!
#বি_দ্র: এই গল্পের সকল চরিত্র সম্পুর্ণ কাল্পনিক_